Dhaka ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
News Title :
শেরপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শেরপুরে শাহজাহান হজ্জ ট্রাভেলস এর প্রথম ফ্লাইটে হজ্জ যাত্রা উপলক্ষে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত এপেক্স ক্লাব অব শেরপুরের দ্বিতীয় পালাবদল অনুষ্ঠিত শেরপুরে বাসের ধাক্কায় মুরগির ব্যবসায়ী নিহত শেরপুরে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ শেরপুরে শহীদ কামারুজ্জামানের ১০ম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইগাতীর গজনীতে মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান, ১৭টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার শেরপুরে আমদানীকারক এর ম্যানেজারকে কুপিয়ে ৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ছিনতাই: এক ছিনতাইকারী আটক শেরপুরে চোরাকারবারি ‘ডন মাসুদ’ গ্রেফতার, শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ঝিনাইগাতীতে বৈশাখী মেলায় জুয়ার আসর উচ্ছেদে যাওয়ায় পুলিশের ওপর হামলা

শেরপুরে চাঞ্চল্যকর এরশাদ কবিরাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো পুলিশ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৩২ Time View

শেরপুরের চাঞ্চল্যকর এরশাদ আলী (৫৮) কবিরাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মাত্র সাড়ে তিন লাখ টাকা কন্ট্রাকে হত্যা করা হয় এরশাদ কবিরাজকে। এরশাদ কবিরাজের সম্বন্ধী আব্দুল মোতালেব এই ভাড়াটিয়াদের দিয়ে তাকে জবাই করে খুন করায়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫ জনকে এপর্যন্ত গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এরমধ্যে ৪ ডিসেম্বর ভোরে শেরপুর ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এ হত্যাকান্ডের মাষ্টার মাইন্ড আঃ মোতালেব (৫৬), হানিফ মিয়া (২৭) ও শহিদুল ইসলাম (৪৫)কে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা আঃ মোতালেব শেরপুর সদর উপজেলার চরমুচারিয়া মাঝপাড়ার মোঃ ওয়াহেদ আলীর ছেলে এবং এরশাদ কবিরাজের সম্বন্ধী, হানিফ মিয়া একই উপজেলার ডাকপাড়ার লেবু মিয়ার ছেলে এবং শহিদুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলা সদরের শরিফপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মৃত লাল মাহমুদের ছেলে। এর আগে গ্রেফতার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে আব্দুর রশিদ ও ছানোয়ার হোসেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে এরশাদ কবিরাজ বিভিন্ন স্থানে কবিরাজি চিকিৎসা করতো ও ঝারফোক দিতো। বেশ কিছুদিন আগে তার সম্বন্ধী আঃ মোতালেবের ছেলে শিমুল অসুস্থ হয়ে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। এতে তার (মোতালেবের) সন্দেহ হয় এরশাদ কবিরাজ জাদু করে তার ছেলেকে পাগল বানাইছে। সম্প্রতি ঝড়ে মোতালেবের মেয়ের ঘর ভেঙে যায়। এতেও এরশাদ কবিরাজের জাদুকেই দায়ী করে মোতালেব। এই জেদেবশবর্তী হয়েই এরশাদ কবিরাজকে খুন করার পরিকল্পনা করে আঃ মোতালেব। সে হানিফ ও শহিদুলের মধ্যস্থতায় স্থানীয় ময়নাল সাধুর সাথে এরশাদ কবিরাজকে খুন করার জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকার চুক্তি করে। চুক্তি মোতাবেক ময়নাল সাধু এরশাদ কবিরাজকে গত ১৭ অক্টোবর নিজ বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। ডেকে নিয়ে আব্দুর রশিদ, হানিফ ও ছানোয়ারের সহযোগিতায় এরশাদ কবিরাজকে শেরপুর ব্রক্ষপুত্র সেতুর নীচে বালুচরে হাত-পা বেঁধে জবাই করে খুন করার পর সেখানেই বালু চাপা দিয়ে রাখে। এর পাঁচ দিনের মাথায় ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরশাদ আলী কবিরাজ পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়েও তিনি খুন হতে পারেন।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতদের আসামি করে শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে সন্দেহ ভাজন আব্দুর রশিদ ও ছানোয়ার হোসেনকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই বেরিয়ে আসে মূল রহস্য। পুলিশ বিষয়টি গোপন রেখে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জ ৪ ডিসেম্বর ভোরে মোতালেব, হানিফ মিয়া ও শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এব্যাপারে শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুবাইদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুরু থেকেই পুলিশ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে সতর্কতার সাথে মামলাটি তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যে রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। তারা পুলিশের কাছে ও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

শেরপুরে চাঞ্চল্যকর এরশাদ কবিরাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো পুলিশ

Update Time : ০৬:২৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শেরপুরের চাঞ্চল্যকর এরশাদ আলী (৫৮) কবিরাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মাত্র সাড়ে তিন লাখ টাকা কন্ট্রাকে হত্যা করা হয় এরশাদ কবিরাজকে। এরশাদ কবিরাজের সম্বন্ধী আব্দুল মোতালেব এই ভাড়াটিয়াদের দিয়ে তাকে জবাই করে খুন করায়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫ জনকে এপর্যন্ত গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এরমধ্যে ৪ ডিসেম্বর ভোরে শেরপুর ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এ হত্যাকান্ডের মাষ্টার মাইন্ড আঃ মোতালেব (৫৬), হানিফ মিয়া (২৭) ও শহিদুল ইসলাম (৪৫)কে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা আঃ মোতালেব শেরপুর সদর উপজেলার চরমুচারিয়া মাঝপাড়ার মোঃ ওয়াহেদ আলীর ছেলে এবং এরশাদ কবিরাজের সম্বন্ধী, হানিফ মিয়া একই উপজেলার ডাকপাড়ার লেবু মিয়ার ছেলে এবং শহিদুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলা সদরের শরিফপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মৃত লাল মাহমুদের ছেলে। এর আগে গ্রেফতার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে আব্দুর রশিদ ও ছানোয়ার হোসেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে এরশাদ কবিরাজ বিভিন্ন স্থানে কবিরাজি চিকিৎসা করতো ও ঝারফোক দিতো। বেশ কিছুদিন আগে তার সম্বন্ধী আঃ মোতালেবের ছেলে শিমুল অসুস্থ হয়ে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। এতে তার (মোতালেবের) সন্দেহ হয় এরশাদ কবিরাজ জাদু করে তার ছেলেকে পাগল বানাইছে। সম্প্রতি ঝড়ে মোতালেবের মেয়ের ঘর ভেঙে যায়। এতেও এরশাদ কবিরাজের জাদুকেই দায়ী করে মোতালেব। এই জেদেবশবর্তী হয়েই এরশাদ কবিরাজকে খুন করার পরিকল্পনা করে আঃ মোতালেব। সে হানিফ ও শহিদুলের মধ্যস্থতায় স্থানীয় ময়নাল সাধুর সাথে এরশাদ কবিরাজকে খুন করার জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকার চুক্তি করে। চুক্তি মোতাবেক ময়নাল সাধু এরশাদ কবিরাজকে গত ১৭ অক্টোবর নিজ বাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। ডেকে নিয়ে আব্দুর রশিদ, হানিফ ও ছানোয়ারের সহযোগিতায় এরশাদ কবিরাজকে শেরপুর ব্রক্ষপুত্র সেতুর নীচে বালুচরে হাত-পা বেঁধে জবাই করে খুন করার পর সেখানেই বালু চাপা দিয়ে রাখে। এর পাঁচ দিনের মাথায় ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরশাদ আলী কবিরাজ পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশীদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়েও তিনি খুন হতে পারেন।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতদের আসামি করে শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে সন্দেহ ভাজন আব্দুর রশিদ ও ছানোয়ার হোসেনকে সম্প্রতি গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকেই বেরিয়ে আসে মূল রহস্য। পুলিশ বিষয়টি গোপন রেখে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জ ৪ ডিসেম্বর ভোরে মোতালেব, হানিফ মিয়া ও শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এব্যাপারে শেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জুবাইদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুরু থেকেই পুলিশ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে সতর্কতার সাথে মামলাটি তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যে রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে এবং বেশিরভাগ আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। তারা পুলিশের কাছে ও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।