শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় এক কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় থানা ঘেরাও ও নকলা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে উপজেলার পাঠাকাটা গ্রামে কিশোরী গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি আশিক মিয়াকে (২০) গ্রেপ্তারের পর তার বিচারের দাবিতে ওই অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর দেড়টার দিকে নকলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এসএম মাসুম ও রাইয়্যান আল মাহাদি অনন্তের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, এলাকাবাসি ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গ্রেফতার হওয়া আসামি আশিককে বিচারের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামে এবং নকলা থানা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন।
ওইসময় থানার ভিতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমানসহ পুরো পুলিশ বাহিনী। ঘন্টা দেড়েক পর বিক্ষোভকারীরা থানা ছেড়ে থানা ফটকের সামনে ঢাকা-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় নকলা থানার সামনে ঢাকা-শেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা সকল ধরনের যানবাহন। শ্লোগান দেওয়া হয় ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘রেপিস্টের আস্তানা, বাংলাদেশে থাকবে না’, ‘রেপিস্টের চামড়া, তুলে নিব আমরা’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই, দিতে হবে’।
খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ৪টার দিকে নকলা থানায় আসেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আব্দুল করিম। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক খোরশেদুর রহমানসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ এবং নকলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এসএম মাসুম, রাইয়্যান আল মাহাদি অন্তর ও ইমাম হাসান সাব্বিরকে নিয়ে ওসি’র কক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।
প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ধর্ষণ মামলার অপর আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দিলে থানা থেকে বেরিয়ে যান নেতৃবৃন্দ। পরে বেলা সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর করিম জানান, কারও আইন হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। ধর্ষণের বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকী আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে। আশা করি আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে গ্রেফতার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারব।