ঢাকা ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আওয়ামী লীগের পতন, ৩২ নাম্বার গুঁড়িয়ে দেওয়া সব রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষা- এবি পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ শেরপুরে আবুল হাসেমের ছেলে অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামী কামরুজ্জামান সুজন ও কামরুল হাসান গ্রেফতার শেরপুরে জাতীয় স্কুল ক্রিকেট: দ্বিতীয় জয়ে ফাইনালে পথে এগিয়ে আইডিয়াল প্রিপারেটরী এন্ড হাইস্কুল শেরপুরে দুই সন্তানের জননীর লাশ উদ্ধার শেরপুরে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামগণের ‘ইমাম সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত শেরপুরে শিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শেরপুরের সীমান্তে প্রায় ৬ টন ভারতীয় চোরাই জিরা উদ্ধার শেরপুরের গাজীরখামার ইউনিয়ন পরিষদে নব-নিয়োগকৃত প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নালিতাবাড়ীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীসহ ৬ আসামি গ্রেফতার শেরপুরে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও রেইজ প্রকল্পের কার্যক্রম অবহিতকরণ সেমিনার

পরকালে হত্যাকাণ্ডের বিচার যেভাবে হবে

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:১২:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

ইসলামে নিরপরাধ মানুষ হত্যা জঘন্যতম অপরাধ। পবিত্র কোরআনের ভাষায়- পুরো মানবজাতিকে হত্যা করার মতো। ইরশাদ হয়েছে, ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে দুনিয়ার সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ হলো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা।’ (বুখারি: ৬৮৭১, মুসলিম: ৮৮) অপর হাদিসে এসেছে- ‘আল্লাহ তাআলার নিকট পুরো বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাওয়া অধিকতর সহজ একজন মুসলিম হত্যা অপেক্ষা।’ (তিরমিজি: ১৩৯৫; নাসায়ি: ৩৯৮৭; ইবনু মাজাহ: ২৬৬৮)

আল্লাহ তাআলার আদালতে কিয়ামতের দিন সকল অপরাধের বিচার হবে। সেখানে আল্লাহর হকের যেমন বিচার হবে, তেমনি বান্দার হকেরও বিচার হবে। বান্দার হক সম্পর্কিত যত মোকদ্দমা রয়েছে, তার মধ্যে সর্বপ্রথম বিচার হবে রক্তপাত ও হত্যার। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- أَوَّلُ مَا يُقْضূى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي الدِّمَاءِ ‘কেয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকাদ্দমার ফয়সালা হবে, তা হলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত।’ (সহিহ মুসলিম: ১৬৭৮)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, হত্যাকারী কেয়ামতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীর মাথা ধরে রাখবে এবং বলবে, হে রব! আপনি একে প্রশ্ন করুন, কেন আমাকে হত্যা করেছে? (ইবন মাজাহ: ২৬২১, মুসনাদে আহমদ: ১/২৪০)

রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেছেন- لَوْ أَنَّ أَهْلَ السّمَاءِ وَالأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبّهُمُ اللهُ فِي النارِ ‘আসমান ও জমিনবাসীর সকলে যদি একজন মুমিনের হত্যায় শরিক থাকে তবুও আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের সকলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (তিরমিজি: ১৩৯৮)

মানুষ হত্যা করে পার পাবার সুযোগ আল্লাহর আদালতে নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হবে জাহান্নাম। তার মধ্যে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে অভিশাপ দেবেন। তেমনিভাবে তিনি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভীষণ শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘(যে ব্যক্তি শিরক ও অন্যায় হত্যাকাণ্ড এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হবে) কেয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে এবং লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা ফুরকান: ৬৯)

দুনিয়াতেও খুনিরা লাঞ্ছিত। অন্যায়ভাবে যারা কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তাদের ইবাদত কবুল করা হয় না। উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ঈমানদারকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে এবং তাকে হত্যা করে খুশি হবে, তার কোনো ফরজ ও নফল ইবাদত আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন না।’ (সহিহ বুখারি: ৪২২১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। খুন-খারাবির মতো ঘৃণ্য অপরাধ নির্মূল করতে সর্বত্র কোরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আওয়ামী লীগের পতন, ৩২ নাম্বার গুঁড়িয়ে দেওয়া সব রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষা- এবি পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ

পরকালে হত্যাকাণ্ডের বিচার যেভাবে হবে

আপডেট সময় : ০৭:১২:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

ইসলামে নিরপরাধ মানুষ হত্যা জঘন্যতম অপরাধ। পবিত্র কোরআনের ভাষায়- পুরো মানবজাতিকে হত্যা করার মতো। ইরশাদ হয়েছে, ‘নরহত্যা বা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের কারণ ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে দুনিয়ার সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কবিরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ হলো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা।’ (বুখারি: ৬৮৭১, মুসলিম: ৮৮) অপর হাদিসে এসেছে- ‘আল্লাহ তাআলার নিকট পুরো বিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাওয়া অধিকতর সহজ একজন মুসলিম হত্যা অপেক্ষা।’ (তিরমিজি: ১৩৯৫; নাসায়ি: ৩৯৮৭; ইবনু মাজাহ: ২৬৬৮)

আল্লাহ তাআলার আদালতে কিয়ামতের দিন সকল অপরাধের বিচার হবে। সেখানে আল্লাহর হকের যেমন বিচার হবে, তেমনি বান্দার হকেরও বিচার হবে। বান্দার হক সম্পর্কিত যত মোকদ্দমা রয়েছে, তার মধ্যে সর্বপ্রথম বিচার হবে রক্তপাত ও হত্যার। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- أَوَّلُ مَا يُقْضূى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي الدِّمَاءِ ‘কেয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে মোকাদ্দমার ফয়সালা হবে, তা হলো রক্তপাত (হত্যা) সম্পর্কিত।’ (সহিহ মুসলিম: ১৬৭৮)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, হত্যাকারী কেয়ামতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, হত্যাকৃত ব্যক্তি হত্যাকারীর মাথা ধরে রাখবে এবং বলবে, হে রব! আপনি একে প্রশ্ন করুন, কেন আমাকে হত্যা করেছে? (ইবন মাজাহ: ২৬২১, মুসনাদে আহমদ: ১/২৪০)

রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেছেন- لَوْ أَنَّ أَهْلَ السّمَاءِ وَالأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبّهُمُ اللهُ فِي النارِ ‘আসমান ও জমিনবাসীর সকলে যদি একজন মুমিনের হত্যায় শরিক থাকে তবুও আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের সকলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’ (তিরমিজি: ১৩৯৮)

মানুষ হত্যা করে পার পাবার সুযোগ আল্লাহর আদালতে নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হবে জাহান্নাম। তার মধ্যে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন ও তাকে অভিশাপ দেবেন। তেমনিভাবে তিনি তার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ভীষণ শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘(যে ব্যক্তি শিরক ও অন্যায় হত্যাকাণ্ড এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হবে) কেয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে এবং লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।’ (সুরা ফুরকান: ৬৯)

দুনিয়াতেও খুনিরা লাঞ্ছিত। অন্যায়ভাবে যারা কোনো মুমিনকে হত্যা করে, তাদের ইবাদত কবুল করা হয় না। উবাদা ইবনে সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ঈমানদারকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে এবং তাকে হত্যা করে খুশি হবে, তার কোনো ফরজ ও নফল ইবাদত আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন না।’ (সহিহ বুখারি: ৪২২১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। খুন-খারাবির মতো ঘৃণ্য অপরাধ নির্মূল করতে সর্বত্র কোরআন-সুন্নাহর বিধান বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।