Dhaka ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেরপুরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৫৩ Time View

ভেজাল খাদ্য নিরব ঘাতক। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে একজন মানুষ ‘স্লো পয়জনিং’য়ের মতো ধীরে ধীরে কর্মশক্তি হারিয়ে, মেধাশূন্য হয়ে, নানা রোগে শোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। খাদ্যে ভেজাল করা সবচেয়ে গর্হিত কাজ। যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান, তারা ধীরে ধীরে দেশ-জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে যেমন আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ কা দরকার। তেমনি যারা ক্রেতা এবং ভোক্তা তাদরকেও সচেতন হতে হবে। ভেজাল এবং অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য আমাদেরকে নিরাপদ খাদ্য ও খাবার নিরাপদ রাখার বিষয়ে অবহিতকরণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পরিবার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামজিক সংগঠনগুলো এক্ষেত্রে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে। শেরপুরে ‘নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক’ এক সেমিনারে এমন কথা বলেন আলোচকরা।

নিরাপদ খাদ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে ২ ফেব্রুয়ারি রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। ‘খাদ্য হোক নিরাপদ, সুস্থ্য থাকুক জনগণ’-এমন প্রতিপাদ্যে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে নিরাপদ খাবারে গুরুত্ব, খাবার নিরাপদ রাখার কৌশল, অনিরাপদ খাবার গ্রহণের ঝুঁকি এবং নিরাপদ খাদ্য আইন সম্পর্কে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জেলা কার্যালয়ে সহকারি পরিচালক শাকিলুজ্জামান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসা. হাফিজা জেসমিন-এর সভাপতিত্বে এতে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান প্রধান অতিথি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান ভুইঁয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে খাবার নিরাপদ রাখার ৫টি চাবিকাঠি সম্পর্কে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথমেই আসে পরিস্কার-পচ্ছিন্নতা বজায় রাখা অর্থাৎ খাবার তৈরী ও গ্রহণের আগে ভালো করে হাত ধোয়া, পরিচ্ছন্ন থালা-বাসেনে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা। দ্বিতীয়ত কাঁচা ও রান্না করা খাদ্য আলাদা রাখা, তৃতীয়ত সঠিকভাবে রান্না করা। অর্থাৎ সঠিক তাপে বা ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী তাপমাত্রায় ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করা বিশেষ করে মাছ, মাংস, মুগী, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার পুঙ্খানুভাবে রান্না করতে কতে হবে। চতুর্থত সঠিক তাপমাত্রায় খাদ্য সংরক্ষণ করা। অর্থাৎ রান্না করা গরম খাবার ৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী এবং ঠান্ডা খাবার ৫ ডিগ্রী এর নীচে তাপমাত্রায় (ফ্রিজে) সংরক্ষণ করা এবং সংরক্ষণ করা খাবার পরিবেশনের আগে ভালভাবে গরম করা। খাবার সবসময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ছড়াতে না পারে। পঞ্চমত নিরাপদ পানি ও খাদ্য উপকরণ ব্যবহার করা। অর্থাৎ নিরাপদ উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা, পানি ফুটয়ে বিশুদ্ধ করে খাওয়া, ফলমুল ও শাকসব্জী নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া।

সেমিনারে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাকিল আহমেদ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সামিউল হক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মে. ওবায়দুল্লাহ, প্রেসক্লাব সভাপতি কাকন রেজা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মাসুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আশরাফুল আলম প্রমুখ। সেমিনারে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, ক্যাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, এনজিও এবং ছাত্র ও তরুণ প্রতিনিধি সহ অর্ধশতাধিক সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

শেরপুরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার

Update Time : ১২:১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভেজাল খাদ্য নিরব ঘাতক। ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে একজন মানুষ ‘স্লো পয়জনিং’য়ের মতো ধীরে ধীরে কর্মশক্তি হারিয়ে, মেধাশূন্য হয়ে, নানা রোগে শোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। খাদ্যে ভেজাল করা সবচেয়ে গর্হিত কাজ। যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান, তারা ধীরে ধীরে দেশ-জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে যেমন আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ কা দরকার। তেমনি যারা ক্রেতা এবং ভোক্তা তাদরকেও সচেতন হতে হবে। ভেজাল এবং অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য আমাদেরকে নিরাপদ খাদ্য ও খাবার নিরাপদ রাখার বিষয়ে অবহিতকরণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পরিবার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামজিক সংগঠনগুলো এক্ষেত্রে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে। শেরপুরে ‘নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক’ এক সেমিনারে এমন কথা বলেন আলোচকরা।

নিরাপদ খাদ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে ২ ফেব্রুয়ারি রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। ‘খাদ্য হোক নিরাপদ, সুস্থ্য থাকুক জনগণ’-এমন প্রতিপাদ্যে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে নিরাপদ খাবারে গুরুত্ব, খাবার নিরাপদ রাখার কৌশল, অনিরাপদ খাবার গ্রহণের ঝুঁকি এবং নিরাপদ খাদ্য আইন সম্পর্কে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জেলা কার্যালয়ে সহকারি পরিচালক শাকিলুজ্জামান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসা. হাফিজা জেসমিন-এর সভাপতিত্বে এতে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান প্রধান অতিথি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান ভুইঁয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে খাবার নিরাপদ রাখার ৫টি চাবিকাঠি সম্পর্কে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রথমেই আসে পরিস্কার-পচ্ছিন্নতা বজায় রাখা অর্থাৎ খাবার তৈরী ও গ্রহণের আগে ভালো করে হাত ধোয়া, পরিচ্ছন্ন থালা-বাসেনে খাবার রান্না ও পরিবেশন করা। দ্বিতীয়ত কাঁচা ও রান্না করা খাদ্য আলাদা রাখা, তৃতীয়ত সঠিকভাবে রান্না করা। অর্থাৎ সঠিক তাপে বা ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী তাপমাত্রায় ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করা বিশেষ করে মাছ, মাংস, মুগী, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার পুঙ্খানুভাবে রান্না করতে কতে হবে। চতুর্থত সঠিক তাপমাত্রায় খাদ্য সংরক্ষণ করা। অর্থাৎ রান্না করা গরম খাবার ৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী এবং ঠান্ডা খাবার ৫ ডিগ্রী এর নীচে তাপমাত্রায় (ফ্রিজে) সংরক্ষণ করা এবং সংরক্ষণ করা খাবার পরিবেশনের আগে ভালভাবে গরম করা। খাবার সবসময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ছড়াতে না পারে। পঞ্চমত নিরাপদ পানি ও খাদ্য উপকরণ ব্যবহার করা। অর্থাৎ নিরাপদ উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা, পানি ফুটয়ে বিশুদ্ধ করে খাওয়া, ফলমুল ও শাকসব্জী নিরাপদ পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া।

সেমিনারে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাকিল আহমেদ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সামিউল হক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মে. ওবায়দুল্লাহ, প্রেসক্লাব সভাপতি কাকন রেজা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মাসুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আশরাফুল আলম প্রমুখ। সেমিনারে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা, ক্যাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, এনজিও এবং ছাত্র ও তরুণ প্রতিনিধি সহ অর্ধশতাধিক সুধীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।