Dhaka ০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশপ্রেমী ও সৎ হাসান আরিফকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয় 

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৪৪ Time View

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা আজ বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় এই বিশিষ্ট আইনজীবীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী, স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণের উপস্থিতিতে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। 

জানাজা শেষে তারা গণমাধ্যমকে বলেন, দেশপ্রেমী ও সৎ হাসান আরিফকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, হাসান আরিফকে সবাই শ্রদ্ধা করতো। তিনি একটি বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন পার করেছেন। তাঁর সততা সম্পর্কে কেউ কোনোদিন প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০০১ সালে আমাকে বেগম খালেদা জিয়া এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের জন্য একজন ভালো আইনজীবী খুঁজে নিয়ে আসতে বলেন। আমি তখন হাসান আরিফকে নিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে তিনি এটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন ও দীর্ঘদিন দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি এই অঙ্গনে একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে জাতির, দেশের ও আইন অঙ্গনের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়।  

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এমন খুব কম মানুষই আছেন যিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার- এই দুই সময়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অত্যন্ত বিদগ্ধ, সৎ ও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল হিসেবে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন ও বিচারের ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। 

ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দীর্ঘদিনের সহকর্মীকে হারিয়ে ভারাক্রান্ত প্রবীণ আইনজীবী ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী ও ভালো বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। তাঁকে হারানোর ফলে সুপ্রিম কোর্ট বারে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হলো। দেশের প্রতি দরদ নিয়ে কাজ করা আইনজীবীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল। তিনি দেশের জন্য ভাবতেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতেন। এমন দেশপাগল কিন্ত প্রচারবিমুখ মানুষ আমাদের মধ্যে অনেক কমই আছেন। তাঁর মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্ট ও গোটা বাংলাদেশ একজন অভিভাবককে হারালো। 

তাঁর অনুজ, অগ্রজ ও সহকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন কর্মঠ, নীতিবান আইনজীবী এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ। 

বিদায় বেলায় বিষাদগ্রস্ত চিত্তে তাঁকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর বর্ণিল কর্মজীবনকে নিজেদের মনের ভেতরে চিরস্মরণীয় করে রাখার প্রয়াস ব্যক্ত করেন জানাজায় উপস্থিত হওয়া বিশিষ্টজনেরা। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দেশপ্রেমী ও সৎ হাসান আরিফকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয় 

Update Time : ১০:১৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা আজ বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় এই বিশিষ্ট আইনজীবীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী, স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণের উপস্থিতিতে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। 

জানাজা শেষে তারা গণমাধ্যমকে বলেন, দেশপ্রেমী ও সৎ হাসান আরিফকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, হাসান আরিফকে সবাই শ্রদ্ধা করতো। তিনি একটি বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন পার করেছেন। তাঁর সততা সম্পর্কে কেউ কোনোদিন প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০০১ সালে আমাকে বেগম খালেদা জিয়া এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের জন্য একজন ভালো আইনজীবী খুঁজে নিয়ে আসতে বলেন। আমি তখন হাসান আরিফকে নিয়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে তিনি এটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন ও দীর্ঘদিন দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি এই অঙ্গনে একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে জাতির, দেশের ও আইন অঙ্গনের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়।  

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এমন খুব কম মানুষই আছেন যিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার- এই দুই সময়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অত্যন্ত বিদগ্ধ, সৎ ও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল হিসেবে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইন ও বিচারের ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। 

ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দীর্ঘদিনের সহকর্মীকে হারিয়ে ভারাক্রান্ত প্রবীণ আইনজীবী ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী ও ভালো বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। তাঁকে হারানোর ফলে সুপ্রিম কোর্ট বারে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হলো। দেশের প্রতি দরদ নিয়ে কাজ করা আইনজীবীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল। তিনি দেশের জন্য ভাবতেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতেন। এমন দেশপাগল কিন্ত প্রচারবিমুখ মানুষ আমাদের মধ্যে অনেক কমই আছেন। তাঁর মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্ট ও গোটা বাংলাদেশ একজন অভিভাবককে হারালো। 

তাঁর অনুজ, অগ্রজ ও সহকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন কর্মঠ, নীতিবান আইনজীবী এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ। 

বিদায় বেলায় বিষাদগ্রস্ত চিত্তে তাঁকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর বর্ণিল কর্মজীবনকে নিজেদের মনের ভেতরে চিরস্মরণীয় করে রাখার প্রয়াস ব্যক্ত করেন জানাজায় উপস্থিত হওয়া বিশিষ্টজনেরা।