দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুরের ৩ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর সোমবার সকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আব্দুুল্লাহ আল খায়রুম।
মতবিনিময় সভায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। এজন্য শেরপুরের ৩টি নির্বাচনী এলাকায় আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ করছি। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ও বিনা দ্বিধায় ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন আমরা সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম বলেন, কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রে আগ্রহ সৃষ্টির দায়িত্ব প্রার্থীদের। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা। এখনও জেলায় কোন আতঙ্ক বা ত্রাস সৃষ্টির মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে নির্দিষ্ট কিছু ঘটে থাকলে এবং তা জানালে আইনের আলোকেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারও হুমকিতে যেন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত না করে সে বিষয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি। গুজব নিয়ে এক প্রার্থীর আলোকপাত করার বিষয়ে তিনি বলেন, গুজব হচ্ছে সাইবার ক্রাইম। এটা নির্বাচনী প্রচারণা বা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধা দেওয়ার শামিল বলে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে জেলা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও মন্ত্রণালয়ের সাইবার টিম সক্রিয় রয়েছে। কেউ এ ধরনের কাজ করলে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হবে। গুজবকে শুধুমাত্রা গুজব নয়, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার সাইবার ক্রাইম হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীরা স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা, সভা-সমাবেশ ও পথসভা করতে পারবেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসসহ স্থানীয় থানা পুলিশকে ওই বিষয়ে পূর্বেই জানান দিতে হবে। নির্বাচনে কোন প্রার্থীর বিষোদগার, ব্যক্তিগত চরিত্র হনন ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা যাবে না। সেইসাথে দলীয় প্রার্থী ছাড়া (রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত) কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী পোস্টার-লিফলেটে নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কারও ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না। বেলা ২টা থেকে রাত ৮টার বাইরে কোন মাইকিং প্রচারণা চালানো যাবে না। এছাড়া অন্যান্য নির্বাচনী আচরণবিধি স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানার পাশাপাশি ফৌজদারী সাজা ও প্রার্থিতা বাতিলেরও সুযোগ রয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন শেরপুর-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক, তার সমর্থক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানুয়ার হোসেন ছানুর সমর্থক বায়েযীদ হাছান, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হক মনি, বিএনএম মনোনীত প্রার্থী এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শেরপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর প্রস্তাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, জাসদ মনোনীত প্রার্থী লাল মোহাম্মদ শাজাহান, শেরপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এডিএম শহিদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল হক প্রমুখ।
এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজাবে রহমতসহ অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, প্রতিনিধি ও প্রস্তাবক-সমর্থকগণ উপস্থিত ছিলেন। হামিদুর/দেশবার্তা