র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের র্যাব সদস্যরা ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকার গাজীপুর ও আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার কলেজ ছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার আসামী বাবুল তিলক দাস (২৬) এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার চাঞ্চল্যকর এক শিশুকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার আসামী গোলাপ হোসেন (৪০) নামে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এঘটনায় র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান ৫ এপ্রিল বুধবার দুপুর ১২টায় শেরপুর জেলা শহরের মাধবপুর শেরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিং করেছেন।
এসময় তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার নয়ন বাড়ী গ্রামের শ্রী পরেশ তিলক দাসের ছেলে শ্রী বাবুল তিলক দাস শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার এক কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করায় পরবর্তীতে বিগত ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে ওই কলেজ ছাত্রী কলেজে যাবার পথে নকলা পৌর শহরের ম্যানেজার মার্কেট সম্মুখে পৌছামাত্র বাবুল তিলক দাস একটি সিএনজি যোগে ওই কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ করে গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার ইটাহাটা এলাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে রেখে ওই কলেজ ছাত্রীকে পর্যায়ক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। এদিকে ওই ছাত্রীর পরিবার খোঁজখুঁজির এক পর্যায়ে তাকে না পেয়ে নকলা থানায় ৬ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। কয়েকদিন পর কলেজ ছাত্রী কৌশলে মোবাইল ফোনে তার অবস্থানের কথা জানায়। পরে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং এসময় বাবুল তিলক দাস পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে মামলার বিচারিক এবং আদালতে একটি ধারায় বাবুল তিলক দাসকে তার অনুপস্থিতিতে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং আরেক ধারায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয় আদালত। এছাড়াও বাবুল তিলক দাস দীর্ঘ ৪ বছর পলাতক থাকার পর র্যাব-১৪, সিপিসি-১, কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এম.এম সবুজ রানা সঙ্গীয় ফোর্সসহ গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার ইটাহাটা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। অপরদিকে একই রাতে ঝিনাইগাতী উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ঝিনাইগাতী উপজেলার ডেফলাই গ্রামের বাসিন্দা মো. ছাবেদ আলীর ছেলে গোলাপ হোসেনকে ঢাকার আশুলিয়া জামগড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, মো. গোলাপ হেসেন বিগত ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল একই গ্রামের প্রতিবেশী এক শিশুকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে ঢাকার এয়ারপোর্ট নর্দ্দা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। পরে একই বছরের ২৯ এপ্রিল ওই শিশুকে পুনরায় বাড়ীতে ফিরিয়ে আনে আসামী মো. গোলাপ হোসেন। এঘটনায় শিশুটির পরিবার ওই বছরের ১২ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মো. গোলাপ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত বিচারিক পর্যায়ে একটি ধারায় গোলাপ হোসেনকে ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং আরেক ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। র্যাব সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামী মো. গোলাপ হোসেনকে দীর্ঘ ৯ বছর পলাতক থাকা অবস্থায় ও অপর আসামী বাবুল তিলক দাসকে ৪ বছর পলাতক থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার গভীর রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের বিষয়টি র্যাব-১৪, সিপিসি-১, কোম্পানীর কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান প্রেস ব্রিফিং এর পর বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট থানায় তাদেরকে সোপর্দ করেছে।
হামিদুর/দেশবার্তা
