স্বাধীনতা দিবসের মাসকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষে শেরপুরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) এর ছাত্র ও শিক্ষকরা মিলে ধানক্ষেতে জাতীয় পতাকা আর সবজি ক্ষেতে শাক গাছ দিয়ে মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ তৈরী করেছেন। এতে ছাত্র, শিক্ষক ও স্থানীয়রাও অনেক খুশি। স্বাধীনতার মাসে এটিকে জনসাধারণের সামনে প্রদর্শন করার জন্য শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) এর প্রায় ৪৩ একর জমির বিশাল এলাকায় ধান ও সবজির প্রদর্শনী প্লট। এর মাঝে সবার দৃষ্টি কাড়ে বিশাল এক পতাকা। ধান ক্ষেতের ক্যানভাসে তৈরী করা হয়েছে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্য, ৯৬ ফুট প্রস্থ ও ৩২ ফুট বৃত্তের ব্যাসার্ধের জাতীয় পতাকা। পতাকার সবুজ অংশ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও হাইব্রিড এবং মাঝখানে বৃত্তের লাল অংশ দুলালী সুন্দরী ধানের চারা দিয়ে সাজানো হয়েছে। পতাকার মাঝখানে লাল বৃত্ত দিয়ে বুঝানো হয়েছে লক্ষ শহীদের রক্ত ও সবুজ অংশ দিয়ে বুঝানো হয়েছে বাংলার প্রকৃতিকে। পাশেই সবজির প্লটে লাল শাক ও পাট শাকের চারা দিয়ে তৈরী করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র ও স্মৃতি সৌধ। শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধকরণ, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও জাতীয় পাতাকা সম্পর্কে ধারণা প্রদান এবং সৃজনশীল কাজে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে সৃজন করা জাতীয় পতাকা, মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ সবার জন্য শুক্রবার দুপুরে খুলে দেয়া হয়। জাতীয় সংসদের হুইপ বীরমুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক আনুষ্ঠানিকভাবে ওই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
এটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল আজম খানের সভাপতিত্বে ওইসময় জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সাবেক সদস্য এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শামীম হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আওলাদুল ইসলাম ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম মুসাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের ৭ম বর্ষের শিক্ষার্থী অম্বিকা সেন গুপ্তা প্রাপ্তি, মো, নূর হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের স্যারদের সহযোগিতায় এমন সুন্দর একটা কাজ করতে পেরে খুব খুশি। অনেকেই সৃজনশীল কাজ দেখে খুশি হচ্ছেন এবং আমাদেরকে প্রশংসা করছেন।
স্থানীয় কবি ও সাহিত্যিক আব্দুল আলীম বলেন, আমরা এমন একটি সুন্দর কাজ দেখে সত্যিই খুশি হয়েছি। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে এভাবেই সচেতন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল আজম খান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুকে জানতে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেরপুর জেলায় এটাই ব্যতিক্রমী ও প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রশংসা জানিয়েছেন সরকারদলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আতিউর রহমান আতিক এমপি। তিনি বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের সত্যিকারের ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে জানাতে এখানে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এতে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেয়েছি। এবার আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মতো আরও সবাইকে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি সুশীল সমাজসহ স্থানীয়দের।
হামিদুর/দেশবার্তা