শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলাতে সেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে এক দরিদ্র অসহায় বিধবা নারীর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অর্থ হারিয়ে ও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না পেয়ে এতিম দুই সন্তান নিয়ে ওই পরিবারটি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার নালিতাবাড়ী ইউনিয়নের স্থানীয় সেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতিতে গত বছর মাসিক ৭ হাজার ৫০০ টাকা লভ্যাংশ প্রাপ্তির শর্তে ২ লাখ টাকা ডিপিএস (সঞ্চয়) জমা রাখেন জয়নদ্দিন পাড়া গ্রামের রিকশাচালক তমিজুল ইসলাম। গত ৯ মাস আগে স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান রেখে হঠাৎ মৃত্যু বরণ করেন তমিজদ্দিন। অভাবের সংসারে স্ত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন সংসার পরিচালনার জন্য ওই সমিতি থেকে মাসিক লভ্যাংশ ও জমাকৃত ২ লাখ টাকা ফেরত চাইতে গেলে তালবাহনা শুরু করে সমিতির সভাপতি আবু নাইম ও অর্থ সচিব এমদাদুল হক।
অসহায় বিধবা সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, আমার স্বামী রিকশা চালিয়ে অতি কষ্টে সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সমিতির কাছে ২ লাখ টাকা জমা রাখেন। তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে এতিম সন্তানদের নিয়ে কষ্ট করে জীবন চালাচ্ছি। আমাদের চলার মতো কোন পথ নেই। কোন সহায় সম্পদও নেই। সমিতিতে আমার স্বামীর সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পেতে অনেকের দ্বার দ্বারে ঘুরেও ফল পাচ্ছিনা। তাই এব্যাপারে আমি প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ভুক্তভোগী সুরাইয়ার বাবা সুরুজ আলী, প্রতিবেশি আফসানা আক্তার পলি, ইব্রাহিম খলিল ও মাহবুব মিয়া জানান, সেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি কর্তৃপক্ষ এলাকার অনেকের টাকা আত্মসাত করেছে। এখন এই সমিতির কোন কার্যক্রম নেই। টাকা আত্মসাত করে অর্থ সচিব এমদাদুল হক পলাতক রয়েছে। লোকজন সঞ্চয়ের টাকা ফেরত চাইলে সভাপতি অর্থ সচিবের কাছে দায় চাপিয়ে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। সভাপতির ব্যবহারও ভালো না। বিধবা সুরাইয়া ইয়াসমিন অত্যন্ত নিরীহ গরীব মানুষ। স্বামী হারিয়ে এতিম দুই ছেলে সন্তান নিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছে।
এদিকে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে সেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির কোন কার্যালয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। নেই অস্তিত্ব বা কোন কার্যক্রম। এব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য অর্থ সচিব এমদাদুল হকের মোবাইল ফোনে যোগোযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে সেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবু নাইম বলেন, অর্থ সচিব এমদাদুল হক প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাত করে পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাকে পাওয়া গেলেই সুরাইয়ার ইয়াসমিনের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
আমিরুল ইসলাম/দেশবার্তা