শেরপুর জেলার সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের দশকাহনীয়া গ্রামে বুধবার (২৪ আগস্ট) রাতে শ্বশুর আলাল মিয়ার বাড়িতে মো. জালাল মিয়া (৪২) নামে জামাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
মৃত মো. জালাল মিয়া পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার ডিগ্রিরচর গ্রামের মৃত. ময়নাল মিয়ার ছেলে এবং শেরপুর সদর উপজেলার দশকাহনীয়া গ্রামের আলাল মিয়ার মেয়ের স্বামী।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে জালাল মিয়ার লাশ উদ্ধার করে সদর থানার পুলিশ এবং দুপুরে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।
এঘটনায় জালাল মিয়ার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোবাইলে ডেকে নিয়ে জালাল মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জালাল মিয়ার প্রথম স্ত্রী খোদেজা বেগম ৫/৬ বছর পূর্বে মারা যান। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। এরপর প্রায় ৪ বছর পূর্বে জালাল মিয়া পুনরায় শেরপুর সদর উপজেলার দশকাহনীয়া গ্রামের আলাল মিয়ার মেয়ে জেসমিন বেগমকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে তার তিন বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ে করার পর থেকেই দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন বেগমের সাথে স্বামী জালাল মিয়ার সাংসারিক বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এর জের ধরে প্রায় ২/৩ মাস পূর্বে জেসমিন বেগম অভিমান করে সদর উপজেলার দশকাহনীয়া গ্রামের পিত্রালয়ে চলে আসেন। বুধবার বিকেলে মোবাইল ফোনে শ্বশুরবাড়ি থেকে বউকে নিয়ে যাওয়ার জন্য জালাল মিয়াকে ডেকে আনা হলে একইদিন সন্ধ্যার দিকে জামাই জালাল মিয়া শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন বেগম স্বামী জালাল মিয়াকে তালাক দিয়েছেন বলে জানতে পারেন।
জালাল মিয়ার বোন সম্পা বেগম ও মেয়ে মোছা. জামিলা অভিযোগ করে বলেন, জালাল মিয়া শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিন বেগমের বাবা-মাসহ অন্যরা তাকে (জালাল মিয়া) শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এতে তিনি মারা যান। ঘটনাটিকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন জালাল মিয়ার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জালাল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর জালালের লাশ হাসপাতালে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান।
জালাল মিয়ার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। এজন্য থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তারা এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন। অপরদিকে জালাল মিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় তাদের কোন বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, এঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা যাবে। তবে ঘটনার বিষয়ে জালাল মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হামিদুর/দেশবার্তা