মাদক কেড়ে নেয় মানুষের মনুষত্ববোধ। মাদকাসক্তরা হারায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ। মাদকের জন্য এহেন কোন অপরাধ নেই যাতে তারা পিছপা হয়। তাই অন্যান্য জেলার সাথে শেরপুর জেলাতেও মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে নিস্তার নেই কিশোর ও যুবক সমাজসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তাই মাদকের আগ্রাসন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। সারাদেশের ন্যায় শেরপুরেও আইনশৃঙ্খলার জন্য মাদকাসক্তি ইতিমধ্যে হুমকি হয়ে উঠেছে। মাদক দমনে সরকারের জিরোটলারেন্স সত্বেও এর আগ্রাসন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বা বেড়েই চলেছে। শত বছর পূর্বে মাদক সেবীরা গাঁজা, আফিম, দেশীয়, বিদেশী মদপান ও সেবন করে থাকতো এবং এতে মানব দেহের ক্ষতি হতো ঠিক, সেটা বর্তমান ও আধুনিক বিশ্বে উৎপাদিত হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, কোকেন, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক উঠতি বয়সের যুবক ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ সেবন করায় যেমন শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে, তেমন মানষিক ভারসাম্য হারাচ্ছেন এসব মাদকসেবীরা। এতে করে এসব মাদকসেবীরা সামাজিক অপরাধ থেকে রাষ্ট্রীয় অপরাধ কর্মকাণ্ডে সংঘঠিত হচ্ছে এবং পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থাও কুলষিত করছে তারা।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এসব মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের দমনে অভিযান চালাচ্ছে এবং আটক ও গ্রেফতার করছে। কিন্তু মাদকের সাথে জড়িত আসল গডফাদাররা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। একটি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে মাদকের সাথে জড়িত রাঘব বোয়ালরা সব সময় পর্দার আড়ালে থেকে যায় এবং তাদের এজেন্ট দিয়ে নির্বিঘ্নে রমরমা কারবার করে যাচ্ছে। এ কারবারে যারা আটক বা গ্রেফতার হচ্ছে, তাদেরকে ওই গড়ফাদাররা আদালত থেকে জামিন এবং কারাগার থেকে বের করে আনছেন। এরপর আবার তারা ওই মাদক কারবারে পুনরায় লিপ্ত থেকে দিব্বি আগের মত মাদক পাচার ও সেবন করে আসছে।
শেরপুর আদালত পাড়ায় গিয়ে মাদক মামলা সম্পর্কে বিভিন্ন আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা যায়, মাদক কারবারি ও সেরীরা অনেকেই অভ্যাস গত অপরাধে জড়িত এবং অনেকের ১৫/২০টি করে মাদক মামলা বিচারাধীন রয়েছে তারপরও থেমে নেই তারা। তবে পুলিশ দিয়ে এসব মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের দমন করা সম্ভব নয়। সমাজ থেকে মাদকের আগ্রাসন প্রতিরোধে সমাজ ও প্রত্যেক পরিবারের অভিভাবক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে তবেই মাদক মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে এমনটাই ধারণা সচেতন ও অভিজ্ঞ মহলের।