সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, সিএনজি, অটোরিক্সা থেকে অবৈধভাবে ২৩ জুন রোববার চাঁদা উত্তোলনের সময় চাঁদাবাজির মূল হোতাসহ হাতেনাতে ৮ জন চাঁদাবাজকে এবং চাঁদাবাজির ৩৫ হাজার ৪১ টাকা ও বিভিন্ন আলামত উদ্ধারসহ শেরপুর জেলা শহরের এমএস সামাদ সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপর থেকে চাঁদাবাজদেরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পণ্যবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজির বিষয়টি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় দেশব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। জনদূর্ভোগ দূর করার লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী জামালপুর ও শেরপুরসহ সারাদেশে র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের গোয়েন্দা দল তাদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন স্থানের চাঁদাবাজির তথ্য উদঘাটনের জন্য কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উৎপাদনকারীদের নিকট হতে পন্য সামগ্রী সংগ্রহ পূর্বক ট্রাক/পণ্যবাহী যানবাহনে পাইকারী ও খুচরা বাজারে পৌছানোর সময় পথিমধ্যে নামে বে-নামে ভূয়া রশিদ অথবা কখনো কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে বিপুল পরিমান অর্থ চাঁদাবাজি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অধিনায়ক র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুরের কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে শেরপুর জেলা শহরের এমএস সামাদ সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপর অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ পণ্যবাহী গাড়ি/সিএনজি/অটোরিক্সাতে চাঁদাবাজ চক্রের সক্রিয় সদস্য সর্বমোট ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। মোঃ মোশারফ হোসেন (৩৮), পিতা-মজিবুর রহমান, সাং- পূর্ব নবীনগর, ২। মোঃ আল আমিন (৩৭), পিতা-মোঃ আঃ সাত্তার, সাং-দক্ষিণ নবীনগর, ৩। মোঃ আতিকুর হক (৩৯), পিতা-মোঃ আজিজুল হক, সাং-উত্তর নবীনগর, ৪। মোঃ তারা মিয়া (৪০), পিতা-মৃত তমির হাজী, সাং- তারাকান্দি, ৫। মোঃ আল আমীন সরকার (৩৮), পিতা-মোঃ আমিনুল হক, সাং-নবীনগর, ৬। মোঃ মানিক মিয়া (৫৫), পিতা-মৃত আফছার আলী, সাং- দক্ষিণ নবীনগর, ৭। মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩১), পিতা-মৃত নূর ইসলাম, সাং-বয়রা পরানপুর, ৮। মোঃ আতাউর কবির @ এনামুল (৩৮), পিতা-মোঃ আজাহার আলী, সাং-চক পাঠক, সর্ব থানা-শেরপুর সদর, জেলা-শেরপুর। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চাঁদা আদায়ের নগদ ৩৫ হাজার ৪১ টাকা, ৯ টি মোবাইল, চাঁদাবাজির টাকা হিসাব নিকাশের ২টি টালি খাতা এবং বিপুল পরিমান চাঁদা আদায়ের রশিদ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত চাঁদাবাজির সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। তারা শেরপুর জেলা শহরের এমএস সামাদ সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপর সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়ি/সিএনজি/অটোরিক্সাতে চাঁদাবাজি করে। গ্রেফতারকৃতরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিদিন রাস্তার উপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান হতে পণ্যবাহী যানবাহন শেরপুর হতে নকলা ও নালিতাবাড়ী প্রবেশের সময় তারা লেজার লাইট, লাঠি ও বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারদের নিকট অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রশিদও প্রদান করে থাকে। ড্রাইভাররা তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের গাড়ি ভাংচুর, ড্রাইভার-হেলপারকে মারধর সহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পণ্যবাহী কোন গাড়ি দেখলেই তারা লেজার লাইটের আলো নিক্ষেপ করে তা থামিয়ে কৌশলে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা আদায় করে থাকে। উক্ত চক্র শেরপুর জেলা শহরের এমএস সামাদ সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁকা রাস্তার উপর প্রতি রাতে পণ্যবাহী গাড়ি/সিএনজি/অটোরিক্সাতে চালকদের নিকট হতে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।