শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার জাঙ্গালিয়া কান্দা গ্রামে পালের গরু বিক্রির পর এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে একমণ (৪০ লিটার) দুধ দিয়ে গোসল করে ঋণমুক্ত হলেন শহিদুল ইসলাম নামে এক রাজমিস্ত্রী। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেলে জাঙ্গালিয়াকান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়ির আঙ্গিনায় জনসম্মুখে দুধ দিয়ে গোসল করে তিনি ওই ঋণমুক্তির ঘোষণা দেন। এসময় তিনি শপথ করেন জীবনে আর কোন দিন সমিতি বা এনজিও থেকে কোন ঋণ গ্রহন করবেন না। এর আগে সে ঋণ মুক্ত হতে তার শেষ সম্বল একমাত্র গরুটি বিক্রি করে দেন।
জানা গেছে, উপজেলার বাঘবের ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়াকান্দা গ্রামের আঃ কাদেরের ছেলে শহিদুল ইসলাম এক বছর আগে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঋণের টাকা সাপ্তাহিক কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা থাকলেও তিনি তা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ফলে তিনি ওই এনজিও কর্মকর্তাদের চাপে ঘরের হাস-মুরগি ও ডিম বিক্রি করে কিস্তি দিয়েও ঋণ পরিশোধ হচ্ছিল না। অপরদিকে, রাজমিস্ত্রীর নিয়মিত কাজ না থাকায় ৩ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছিল তার। এছাড়া তিনি অসুস্থ, নিয়মিত কাজে যেতে পারে না। অনেকটা অসহায় হয়ে শেষে সিদ্ধান্ত নেন পালের ষাড় গরুটি বিক্রি করে দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন। পরে তিনি দুধ দিয়ে গোসল করে শপথ নিবেন জীবনে আর কোনদিন ঋণ বা সুদে টাকা ধার করবেন না। এমন সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার জাংগালিয়াকান্দা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বড় একটি পাতিলে এক মণ (৪০ লিটার) দুধ ক্রয় করে প্রকাশ্য দুধ দিয়ে গোসল করে ঋণমুক্তির ঘোষনা দেন। তাকে দেখতে তার বাড়িতে লোকজন ভীড় শুরু করে।
অভিনব কায়দায় দুধ দিয়ে গোসল করা সম্পর্কে জানান, এনজিওর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি রাজমিস্ত্রীর কাজ করে পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে কষ্টে সংসার চালাই। একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করে নিয়মিত টাকাসদিতে পারছিলাম না। ওই এনজিও থেকে কিস্তি পরিশোধে খুব চাপ ছিল। তাই পালের গরু বিক্রি করে ঋণমুক্ত হয়ে দুধ দিয়ে গোসল করি।
আমিরুল ইসলাম/দেশবার্তা