শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাত বেঁধে মারধোর, কান ধরে উঠবস করানো, বিচারের নামে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো সহ জীবন নাশের হুমকির অভিযোগ এনে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভুক্তভোগী।
শনিবার (২৭ মে) দুপুরে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এসব অভিযোগ আনেন একই ইউনিয়নের মৃত সাহেদ আলীর ছেলে মো. সুরুজ আলী।
সংবাদ সম্মেলনে সুরুজ আলী বলেন, গত ১৮ মার্চ আমার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় হাসেম আলী ও নবী হোসেনের যোগসাজশে চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা, ইউপি মেম্বার চাঁনমিয়া আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের ভূয়া অভিযোগ এনে আমাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় ব্যাপক মারধোর করে কানধরে উঠবস করায় ও আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাংচুর করে একলক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করে। পরর্তীতে আমি চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে চেয়ারম্যান সহ পাঁচ জনের নামে শেরপুর আদালতে মামলা করেছি।
মামলা করার ফলে চেয়ারম্যান সহ তার লোকজন প্রতিনিয়ত আমাকে মেরে ফেলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছে। এতে ভীত হয়ে আমি নালিতাবাড়ী থানায় জিডি করি। পরে ওই চেয়ারম্যান টাকা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা করায়। পরে গত ৯ এপ্রিল আবার চেয়ারম্যানের লোকজন আমাকে ও আমার স্ত্রীর ওপর হামলা করে মারধর করে ও আমার স্ত্রীর অলঙ্কার ছিনতাই করে এবং চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। ৯ এপ্রিল আমাকে মারধোর করার ঘটনায় আমার স্ত্রী শেরপুর আদালতে বাদী হয়ে মামলা করে। মামলা গুলো তদন্তাধীন। তখন থেকে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা আমাকে তার লোকজন দ্বারা মেরে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে আসছে। গত ২৫ ও ২৬ মে আমাকে আবারো রাস্তা রোধ করে মারধর করে ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দেয়। এছাড়াও চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকাসহ উল্লেখিত আসামীগণ যে কোন সময় আমার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। আমি এখন প্রতিটা মুহুর্ত জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি, ভয়ে আছি। তাই আগামীগনের উপযুক্ত শাস্তি এবং ন্যায় বিচার সহ আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশ পুলিশের মাননীয় আইজিপি, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি, শেরপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শেরপুর, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা সাংবাদিকদের জানান, সুরুজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ আছে। তাই বিচার করে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিলো। তবে তাকে কোন মারধর বা নির্যাতন করা হয়নি। সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছে।
আমিরুল ইসলাম/দেশবার্তা