স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য এবার ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ফেলার। মিরপুরে এমন এক সহজ সমীকরণের লড়াইয়ে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় স্বাগতিকরা। ওপেনার লিটন কুমার দাসের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে উইকেট ২ হারিয়ে ১৫৮ রানের পুঁজি পায় সাকিব আল হাসানের দল। মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪২ রানে থামে ইংলিশদের ইনিংস। ফলে ১৬ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ১৫৯ রান। মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন ফিল সল্ট। অভিষিক্ত তানভীরের ইসলামের বলে গোল্ডেন ডাক দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এ ডানহাতি ব্যাটার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক জস বাটলার ও ডেভিড মালান। কিন্তু দুই টপ অর্ডারের ৯৫ রানের জুটি ভাঙেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
পাওয়ার প্লেতে নেমেই ব্যাট হাতে নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে থাকেন ইংলিশ অধিনায়ক। দুই ব্যাটারের ব্যাটে প্রথম ছয় ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান সংগ্রহ করে সফরকারীরা। এরপর মিডেল ইনিংসে দেখেশুনে খেলতে থাকে এই দুই টপ অর্ডার।
১২তম ওভারে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন ওপেনার মালান। প্রথম উইকেটের পতনের পর চিরচেনা ইংলিশদের দেখা মিলে মিরপুরে। তবে ১৪তম ওভারে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
অর্ধশতক হাঁকানো মালানকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান বাঁহাতি পেসার। তার গতিতে লিটনের হাতে ক্যাচে দিয়ে বসেন ইংলিশ ওপেনার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্রিজে নামেন বেন ডাকেট। তবে সেই ওভারেই মেহেদী হাসান মিরাজের অসাধারণ ফিল্ডিংয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়েন জস বাটলার।
তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে মঈন আলী ও বেন ডাকেটের ১৯ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ হুংকার জাগালেও টাইগার শিবিরে স্বস্তি এনে তাসকিন আহমেদ। ১৭তম ওভারে মঈন আলীকে সাজঘরে ফেরান এ ডানহাতি পেসার। শেষ পর্যন্ত টাইগারদের বোলিং তোপে আর পেরে উঠেনি সফরকারীরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে রানে থামে বাটলারদের ইনিংস।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লের প্রথম দুই ওভারে উড়ন্ত সূচনা করে দুই টাইগার ওপেনার। স্যাম কারান ও ক্রিস ওকসের করা দুই ওভারে বিনা উইকেটে ১৯ রান তুলে লিটন দাস ও রনি তালুকদার। তৃতীয় ওভারে বল করতে আসা লেগ স্পিনার আদিল রশিদ দুই টাইগার ব্যাটারকে তার ঘূর্ণিতে জাদুতে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেন।
চতুর্থ ওভারে আবারও নতুন বোলারের হাতে বল তুলে দেন ইংলিশ অধিনায়ক। পেসার জফরা আর্চারের করা ওভারে এক চারে ৮ রান তুলেন লিটন দাস। আদিল রশিদের করা পঞ্চম অভারেও সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকে লিটন ও রনি।
পাওয়ার প্লে শেষে ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৪৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের অষ্টম ওভারে ব্যক্তিগত ২৪ রান করে আদিল রশিদের বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার রনি তালুকদার।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্ত ও লিটন দেখেশুনে খেলতে থাকে টাইগাররা। ১৩তম ওভারে সিরিজের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেয়ে যান লিটন। বাঁহাতি ব্যাটার নাজমুল শান্তকে নিয়ে ইংলিশ বোলারদের উপর চড়াও হন টাইগার ওপেনার। আগের দুই ম্যাচে ছন্দহীন এ ডানহাতি ব্যাটার নিজের সরূপে ফিরেছেন।
তার বিধ্বংসী ৫৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে বড় সংগ্রহের ভীত পেয়ে যায় টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে উইকেট হারিয়ে রান সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
নাজমুল হোসেন শান্ত করেন বলে রান। রনির ব্যাট হতে আসে ২৪ রানের অনবদ্য ইনিংস। ইংলিশদের হয়ে ২৩ রানে ১ উইকেট নেন আদিল রশিদ।
জস বাটলারের দলের লজ্জার হারে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাসের পাতায় সাকিব আল হাসানরা।