বৈশ্বিক খাদ্যাভাব মোকাবিলায় সরকার দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কৌশল বাস্তবায়নে কৃষককে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশে কৃষকের বড় অংশ কৃষি উৎপাদনে এনজিওদের কাছ থেকে ঋণ নেন। বলা যায়, এ ঋণের আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ দেশের সিংহভাগ কৃষক। ব্যাংকের বিপরীতে এনজিও ঋণের সুদের হার অন্তত তিন গুণ বেশি। কম সুদে ব্যাংক ঋণ নিয়ে কৃষক চাষাবাদের সুযোগ পেলে কৃষি উৎপাদনে আরো উৎসাহী হবে। কৃষককে ব্যাংক ঋণ নিতে হয়রানির সম্মুখিন হতে হয় এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট।
বর্তমান সরকার এ বিড়ম্বনার অবসানে এখন থেকে কৃষকের বাড়ি বাড়ি কৃষি ঋণ নিয়ে যাবে ব্যাংকের মাঠ কর্মীরা। ব্যাংকের শাখায় চালু হবে কৃষি ঋণ বুথ। কৃষকদের এনজিও নির্ভরতা কমাতে নেওয়া হবে এ উদ্যোগ। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রান্তিক পর্যায়ে দরিদ্র কৃষকের মাঝে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ সহজ করতে ব্যাংক ও কৃষকের দূরত্ব কমিয়ে আনা হচ্ছে। বৈশ্বিক এবং দেশের সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বেশি সুদের ঋণ বিতরণ কমিয়ে ব্যাংক গুলোকে সরাসরি ঋণ নিয়ে কৃষকের বাড়ি বাড়ি যেতে বলা হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সহজে কৃষকের কাছে ঋণ পৌঁছানো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার ঋণ বিতরণে এনজিও নির্ভরতা থেকে কৃষককে দূরে সরাতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংক সরাসরি ঋণ বিতরণ করে না। তারা ঋণ বিতরণের জন্য বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওকে নিয়োগ করে। এনজিওর মাধ্যমে বিতরণকৃত ঋণের সুদ ২৪ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেখানে ব্যাংক গুলো ঋণ বিতরণ করছে ৮ শতাংশ সুদে। কৃষকের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজতর করার সিদ্ধান্ত অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য।
তবে ইতোমধ্যে শেরপুরের সিংহভাগ কৃষক এনজিও নামের দাদন ব্যবসায়ী ও রক্তচোষাদের কবলে পড়ায় কৃষকদের উদ্ধারের উদ্যোগও নিতে হবে সরকারকে। এ উদ্দেশ্যে ঋণ সালিশি বোর্ড গঠনের সম্ভাব্যতা বিবেচনা করা যেতে পারে। কৃষি ঋণ সহজতর হলেই সারাদেশের সাথে শেরপুর জেলার প্রান্তিক কৃষক খাদ্য উৎপাদনে আরো ব্যাপকভাবে উৎসাহিত হবে। এতে করে কৃষি বান্ধব সরকারের ঋণ বিতরণ কার্যক্রমকে মানুষ সাধুবাদ জানাবে বলে অভিজ্ঞ মহলের এমনটাই ধারণা।