ঢাকাMonday , 24 October 2022
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইটি বিশ্ব
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলা
  7. চাকরি চাই
  8. পর্যটন
  9. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. লাইফ স্টাইল
  14. শিক্ষাঙ্গন
  15. সাক্ষাৎকার
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সারাবছর উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে পলিনেট হাউজের জুড়ি নেই

admin
October 24, 2022 6:13 am
Link Copied!

উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনকারী নতুন একটি প্রযুক্তি হচ্ছে পলিনেট হাউস। সারাবছর উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে পলিনেট হাউজের যেন জুড়ি নেই। শেরপুর জেলার নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এতে সফলতার মুখ দেখতে পাচ্ছেন কৃষক।

পলিনেট হাউজে আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সারাবছর উচ্চমূল্যের ফসল সহজেই উৎপাদন করা যায়। হাউজের চারপাশে নেট ও উপরে পলিথিনের ছাউনি থাকায় ফসলে ক্ষতিকর পোক ও মাকড় আক্রমণ করতে পারে না। এছাড়া উপরে পলিথিন ব্যবহার করায় স্বাভাবিক কারনেই রাসায়নিক সার ব্যবহারের খুব বেশি প্রয়োজন হয় না। তাই কৃষকরা এখানে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। ফলে ওই পদ্ধতিতে সারাবছর উচ্চমূল্যের বিভিন্ন ফসল উৎপাদনসহ শাক-সবজি সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত চারা উৎপাদন করা সম্ভব। পলিনেট হাউজ পদ্ধতি ব্যবহারে অল্পশ্রমে, স্বল্পব্যয়ে সহজেই নিরাপদ শাক ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। এখানে উৎপাদিত শাক-সবজি ও অন্যান্য ফসল নিরাপদ হওয়ায় চাহিদা বেশি। আর চাহিদা বেশি থাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন।

এমন একজন কৃষক নকলা পৌরসভার চরকৈয়া মহল্লার মো. ফরিদুল ইসলাম। তার সফলতা দেখে স্থানীয় অনেক কৃষক উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে পলিনেট হাউজ পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী ও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন আরো অনেকে। নিজের গৃহপালিত গরুর গোবরসহ নানা জৈব সার প্রয়োগ করে পলিনেট হাউসে নিরাপদ শাক-সবজি, বিভিন্ন ফসল ও চারা উৎপাদন করতে পারায় কৃষকরা এতে আগ্রহী হয়েছেন। ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে নিরাপদ কৃষিপণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আগামীতে শেরপুর জেলায় বিপ্লব ঘটবে বলে এমনটাই ধারনা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকসহ কৃষি কর্মকর্তাগণ।

নকলা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পলিনেট হাউজ নির্মাণ করতে প্রায় ১৬ লাখ টাকা করে ব্যয়ে হয়েছে। এসব হাউজে সারাবছর উচ্চমূল্যের নিরাপদ শাক-সবজি ও বিভিন্ন ফসলের চারা উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা। পলিনেট হাউজে বছরব্যাপী উচ্চমূল্যের ফসল যেমন- টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রুকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, ফুলকপি ও বাধাকপি, লেটুসসহ বিভিন্ন শাক সবজি ও কৃষি চারা উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

কৃষক ফরিদুল ইসলাম ১০ শতাংশ জমিতে পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে নিরাপদ শাক-সবজি, বিভিন্ন ফসল, ফল ও সবজির চারা উৎপাদন করছেন। এর সফলতা দেখে দেশের সর্বত্র এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারলে দেশের সকল এলাকার কৃষকরা এটার সুফল ভোগ করবেন। তাতে একদিকে যেমন সারাবছর সব ধরনের শাক সবজি পাওয়া যাবে, অন্যদিকে চাষিরা লাভবান হবেন। আর ভোক্তারা পাবেন নিরাপদ শাক সবজি ও বিভিন্ন ফসল এমনটাই মনে করছেন কৃষকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ফরিদুলের পলিনেট হাউজে সরেজমিনে গিয়ে তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আধুনিক এই পলিনেট হাউজে প্লাস্টিক ট্রেপে মাটির পরিবর্তে নারিকেলের ছোবরায় তৈরি কোকোপিটে চারা উৎপাদন করা হয়। এতে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে এখানে সাধারণত ক্ষতিকর রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। তিনি আরো জানান, পলিনেট হাউজে এরইমধ্যে বিভিন্ন কৃষি ফসলের অগণিত চারা উৎপাদন করে বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া এখানে সারাবছর নিরাপদ শাক সবজি ও বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন তিনি। তিনি বলেন, এই পলিনেট হাউজটি কৃষি বিভাগ থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয়েছে। আমিসহ অনেকেই এতে খুব খুশি। তিনি আরো বলেন, আমি পলিনেটে অসময়ের সবজি চাষ ও চারা উৎপাদন করে সুফল পেয়েছি। আগাম সবজি চাষের জন্য অনেকে আমার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করছেন। অসময়ে বিভিন্ন নিরাপদ শাক সবজি ও বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করায় সেগুলো বিক্রি করে উপযুক্ত দাম পাচ্ছেন। ক্রেতারা বেশি দামে শাক সবজিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য কিনে নেওয়ায় লাভবান হচ্ছেন ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি ৫ শতাংশ জমিতে চারা উৎপাদন করে যে টাকা আয় করেছি, ৫০ শতাংশ জমিতে ধান বা অন্য কোন ফসল আবাদ করে এ টাকা আয় করা সম্ভব না।

ভূরদী কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মো. ছাইয়েদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন জানান, তারা ফরিদুলের পলিনেট হাউজ পরিদর্শন করেছেন। তা দেখে ও এর সুফল শুনে তাদের কৃষক সংগঠনের অনেকে আগামীতে এই পদ্ধতিতে শাক সবজি, বিভিন্ন ফসল ও চার উৎপাদন করবেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করায় কৃষিতে যেমন বৈচিত্র আসবে, তেমনি অনেকেই আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান পাবে। পলিথিনের ছাউনি থাকায় এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভিতরে প্রবেশে করতে পারেনা, ফলে অতি বৃষ্টিসহ যেকোন সাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউজ দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন বলে তিনি জানান। এ হাউজের মাধ্যমে শীতকালীন সবজি গুলো যেমন সহজেই গ্রীষ্মকালে উৎপাদন করা যায়, তেমনি গ্রীষ্মকালের সবজিও শীতে উৎপাদন করা যায়। এছাড়া যেকোন শাক সবজি ও বিভিন্ন ফসলের চারা উৎপাদনে এই পদ্ধতির বিকল্প নেই বলে কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ মনে করেন।

মোশারফ হোসাইন/দেশবার্তা

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০