শেরপুরে চাঞ্চল্যকর এক ধর্ষণ মামলায় বিপ্লব মিয়া (৩৮) নামে এক যুবকের যাবজ্জীন সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (৩ আগস্ট) বিকেলে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. আখতারুজ্জামান আসামীর অনুপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষনা করেন। দন্ডিত বিপ্লব নালিতাবাড়ী উপজেলার নিলামপট্টি এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে ও পেশায় একজন মুদি দোকানী। একই সাথে ট্রাইব্যুনাল মামলার অপর আসামী রমজান আলী (৪৮) বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১৮ সালের প্রথম দিকে এক শুক্রবার বিকেলে নালিতাবাড়ী শহরের সিটপাড়া নদীরপাড় এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী পার্শ্ববর্তী তারাগঞ্জ উত্তর বাজার পুরাতন অগ্রণী ব্যাংকের সম্মুখে খালি বোতল কুড়াতে যায়। এসময় ব্যাংকের সম্মুখে বসে থাকা মুদি দোকানী বিপ্লব মিয়া খালি বোতল দেয়ার কথা বলে ওই নারীকে ব্যাংকের পিছনে একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিন্তু নানা চাপ ও হুমকির মুখে ওই নারী প্রথমে তা চেপে গেলেও পরবর্তীতে সে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে সে মুখ খুলে এবং বিপ্লবসহ একই কায়দায় ২ দিন পূর্বে ধর্ষণের শিকার হওয়া রমজান আলীর বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার কিছুদিন পর পুলিশের হাতে রমজান আলী গ্রেফতার হলেও ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষায় সে ওই নারীর গর্ভজাত সন্তানের জৈবিক পিতা প্রমাণিত হয়নি। এর কিছুদিন পর অকাল গর্ভপাতে ওই সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
পরে তদন্ত শেষে ২০২০ সালে ১৫ জুন ওই ২ আসামীর বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল ওয়ারেস।
অপরদিকে বিপ্লব মিয়ার অনুপস্থিতিতেই আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিচার কার্যক্রম শুরু হয় এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় মামলার বাদী-ভিকটিম, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
হামিদুর/দেশবার্তা