শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলাতে সুদের টাকা আদায় করতে না পেরে ঋণ গ্রহিতার শিশু ছেলে সম্রাট (১০) কে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের দেবত্তরপাড়া গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের (৪৫) বিরুদ্ধে।
সোমবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পুলিশ নালিতাবাড়ী উপজেলার নলজোড়া বাজার থেকে অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। অপহৃত সম্রাট একই গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে। সে মালিঝিকান্দা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির ছাত্র।
অপহৃত শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ৭/৮ মাস পূর্বে একই গ্রামের মোফাজ্জলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাদন গ্রহন করে ওই শিশুটির বাবা-মা। পরবর্তীতে ওই টাকার বিপরীতে সুদ বাবদ ১৮ হাজার টাকা ও দাদনের টাকা হত ১৫ হাজার টাকাসহ মোট ৩৩ হাজার টাকা মোফাজ্জলকে তারা পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের জন্য সময় চাইলে মোফাজ্জল সুদাসলে ২ লক্ষ টাকা দাবী করেন। দাবীকৃত টাকা পরিশোধ না করায় কয়েকদিন আগে শিশুটির গার্মেন্টস শ্রমিক মা সুফিয়া খাতুনকে মোবাইল ফোনে তার ছেলেকে অপহরণ করা হবে বলে হুমকি দেয় মোফাজ্জল। এত অল্প সময়ে ২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে অপরাগতা প্রকাশ করায় ৩১ জুলাই দুপুরে মোফাজ্জল শিশুটিকে অপহরণ করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হলে ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল আলম ভুইয়ার নির্দেশে উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুবেল, হাবিবুর রহমান, সাকিব, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাফেল চাম্বুগং সঙ্গীয় ফোর্সসহ বিভিন্ন স্থানে সাড়াশী অভিযান চালিয়ে ১ আগস্ট সোমবার সন্ধ্যায় নালিতাবাড়ী উপজেলার নলজোড়া বাজার এলাকা থেকে অপহৃত শিশু সম্রাটকে উদ্ধার করেন। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোফাজ্জল পালিয়ে যায়। এব্যাপারে শিশু সম্রাটের নানী জুলেখা বেগম বাদী হয়ে ঝিনাইগাতী থানায় অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। তবে এলাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মোফাজ্জল নিজে দাদন ব্যবসায়ী নয়। সে পার্শ্ববর্তী রাইস মিলের একজন শ্রমিক। তবে সে জামিনদার হয়ে অন্য এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে দিয়েছিল। মোফাজ্জল পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নাই। ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল আলম ভুইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অপহরণের দায়ে থানায় মামলা হয়েছে। অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণকারী পলাতক রয়েছে। তাকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হামিদুর/দেশবার্তা