ঢাকাThursday , 17 March 2022
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইটি বিশ্ব
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খেলা
  7. চাকরি চাই
  8. পর্যটন
  9. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. লাইফ স্টাইল
  14. শিক্ষাঙ্গন
  15. সাক্ষাৎকার
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বামীকে তালাক দেওয়ায় স্ত্রীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন

admin
March 17, 2022 4:12 pm
Link Copied!

কখনো নেশার টাকার জন্য মারধর। কখনও বা শ্বশুর বাড়ির লোকদের বঞ্চনা। তবুও স্বামীর সংসার ছাড়তে চাননি নুপুর (২৪)। কিন্তু দাম্পত্য জীবনে ৪ মাসের শিশু সন্তানকে বেঁচে দিলে পাষন্ড স্বামী নাজমুলকে ছাড় দেননি তিনি। সন্তান হারানোর বেদনা, কষ্ট আর ক্ষোভে মাদকাসক্ত স্বামীকে তালাক দেয় নুপুর। তাই প্রতিশোধ নিতে সাবেক স্ত্রী নুপুরের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় নাজমুল। এঘটনায় মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয় নুপুর। তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়। এরপর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দীর্ঘ ৪৫ দিন চিকিৎসা নুপুর ফিরে বাবার বাড়ি। নুপুর শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম তোতা মিয়া। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর।

নুপুরের বাবা তোতা মিয়া বলেন, আমি বয়োবৃদ্ধ মানুষ। নুপুর আমাদের একমাত্র মেয়ে। সংসারে আমরা মোট ৩ জন। এদিকে আমার স্ত্রী ফুলমালা নিজেও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। অভাবের সংসার তাই মাইয়াডা মেধাবী ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও ৮ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় নকলা উপজেলা সদরে দরবেশ আলী ছেলে নাজমুলের সাথে বিয়ে দেই। বিয়ের পর জানতে পারি আমার মেয়ের জামাই নাজমুল মাদকাসক্ত। সে নেশার টাকার জন্য আমার মেয়েকে মারধর করে। এভাবে চলতে থাকে কয়েকবছর। আমার মেয়ের সংসারে আসে ফুটফুটে নাতি। তাকেও (৪ মাস) বয়সে নেশার টাকার জন্য বেঁচে দেয় নাজমুল। হতদরিদ্র এই পিতা আরো জানান, এভাবে শত নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নেশাগ্রস্থ লোভী স্বামী নাজমুলকে তালাক দেয় নুপুর। এরপর জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকায় একটি গামের্ন্টসে চাকরি নেয় সে।

নেশাগ্রস্থ পাষন্ড স্বামী নাজমুল খোঁজ করতে করতে চলে যায় সেখানেও। বাসায় আসার পথে আগে থেকে থেকে ওৎ পেতে থাকা নাজমুল স্ত্রী নুপুরের উপর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেদিন ছিল ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর।  এঘটনায় আমার মেয়ে নুপুর গুরুতর ভাবে দগ্ধ হয়। এরপর সাথে থাকা গামেন্টের্স কর্মীরা নুপুরের গায়ে ধরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত নুপুরকে নেওয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। চিকিৎসার দীর্ঘ ৪৫ দিন পর নুপুরকে হাসপাতাল থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী আকলিমা জানান, প্রায়ই বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসে নুপুর শ্বশুর বাড়িতে যেতে চাইতো না। তারপরও আমরা তাকে জোর করে শ্বশুর বাড়ি পাঠাতাম। নুপুরের স্বামী নেশার টাকার জন্য তাকে খুব মারধর করতো। তার শাশুড়ীও নুপুরকে ঠিকভাবে খেতে দিত না। যদিও দিত তবে সেটা বাসি, পঁচা খাবার। আমরা কেউ জানতাম না যে, নুপুরকে এসময় পার করতে হবে। এলাকাবাসী হিসেবে আমাদের একটাই দাবী, আমরা নাজমুলের ফাঁসি চাই।

আরেক এলাকাবাসী ফিরোজ মিয়া বলেন, একজন মানুষ এত পাষন্ড হতে পারে আমার জানা ছিল না। কিভাবে একটি সুস্থ মানুষ অন্যজনকে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারার চেষ্টা করে? এই প্রথম আমরা দেখলাম। নুপুরের উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। তার বাবা একজন দরিদ্র দিনমজুর। উনার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। বিনা চিকিৎসায় নুপুরের শরীর থেকে পুঁজ এবং গন্ধ বের হচ্ছে। অসহায় নুপুর অসহ্য যন্ত্রণায় কাঁতরাচ্ছে। তার কান্নায় আকাশ বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠছে।

ভুক্তভোগী নুপুর জানান, অনেক স্বপ্ন ছিল স্বামী সংসার নিয়ে সুখে দিন কাঁটাবো। কিন্তু সেই স্বপ্ন আমার দুঃস্বপ্নে রূপ নিল। অনেক যন্ত্রনা, বঞ্চনা সহ্য করেও নাজমুলের সংসার করছিলাম। যখন আমার নাড়িছেঁড়া ধনকেও নেশার টাকার জন্য বেঁচে দিল। তখন আর ঠিক থাকতে পারি নাই। তালাক দেওয়ায় নাজমুল পেট্রোল ঢেলে আমার পুরো শরীর ঝলসে দিয়েছে। আমি গত ২ মাস থেকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকি। কাপড় পরতে পারি না। সবসময় গাঁ জ্বালা পুড়া করে। আমি চাই নাজমুলকে যেন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, নুপুরের মামলাটি গাজীপুরে রয়েছে। মামলাটি শেরপুর আদালতে স্থানান্তরিত হলে আমাদের জন্য আসামী গ্রেফতারে সুবিধা হয়। তবুও নাজমুলের বাড়ি যেহেতু শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায়। সেক্ষেত্রে নাজমুলকে গ্রেফতারের বিষয়ে গাজীপুর থানা পুলিশকে আমরা সহযোগিতা করবো।

এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, নুপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে, তার যাবতীয় দেখভাল আমরা করবো। যদি সে উন্নত চিকিৎসার জন্য বড় কোন হাসপাতালে ভর্তি হতে চায়। তাহলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের সাথে সমন্বয় করে নুপুরের পাশে থাকবে।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ জানান, ইতিমধ্যে নুপুরের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। আগামীতে নুপুরের যে কোন প্রয়োজনে শেরপুর জেলা প্রশাসন তার পাশে থাকবে।

জাহিদুল খান সৌরভ/দেশবার্তা

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
ঢাকা অফিসঃ ১৬৭/১২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা- ১০০০ আঞ্চলিক অফিস : উত্তর তেমুহনী সদর, লক্ষ্মীপুর ৩৭০০